First page Back Continue Last page Overview Image

খুকুদিদিদের বাড়ি

(লীলা মজুমদার আর ছোটবেলাকে)

সোহম ভট্টাচার্য

এক

মাসিমার ছাদে ছানা রেখে আমাদের চড়াই, বাসন্তী খুদ আনতে যায় উড়ে, ছানাদের জন্য, আর মাসিমার পোষা বেড়াল হেরম্ব পাঁচিল দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে থাকে রোদ পোহানো চড়াইছানা আর পাশের বাড়ির মেজজ্যাঠার পোষা কুকুর অমিয় দেখে, হেরম্বকে।

ওমা, এর মধ্যে হঠাৎ মাসিমার ছোটমেয়ে খুকুদিদি হাতে দুধের বাটি আর জল নিয়ে খাওয়াতে বসে বাসন্তীর ছানাকে আর খুকুদিদির পায়রা ক্লাবের বন্ধুরা এসে সারা আকাশ ডাকতে থাকে -- 'খুকুর খুদ', 'খুকুর খুদ' আর রান্নাঘরে মাসিমা গান করে যান, 'আনন্দেরই সাগর হ'তে এসেছে আজ....'।

দুই

এবারের শীতে আমি আর খুকুদিদি পাহাড়ে যাব। সঙ্গে যাবে বাক্সভর্তি নদী আর গাছ। আর ওদের ঠান্ডা লাগবে বলে মাসিমা বুনে দিচ্ছেন আকাশী রঙের কাঁথা। নদীদের রেখে আসার সময়ে খুকুদিদির মনখারাপ হবে, প্রতিদিন বিকেলে তাই আমরা মনখারাপ মকশো করছি। আর আমাদের দেখে খুকুদিদির বাক্স দ্বিজেন্দ্র, ফিকফিক করে হাসছে। বোকাটা বুঝছে না, ওর ও তো মনখারাপ হবে, 'মনখারাপে হাসতে নেই' বলে দিয়েছে খুকুদিদি।

তিন

খুকুদিদি আজ আমায় নিয়ে মেঘ চেনাতে যাবে। সারাদিন রোদ্দুরের পর, আকাশের কষ্ট হ'লে,

মেঘ জমে। এরকমই বলেছে খুকুদিদি। একদম কোণায় যে লাজুক মেঘ, একচিলতে, তার নাম অনুসূয়া। মাঝে গর্জন করছে যারা, ওরা সবাই শ্যামলী আর মুখ হাসি সাদা সাদা যে মেঘগুলো ইস্কুল থেকে ফিরছে, ওদের সবার সাথে আলাপ নেই খুকুদিদির। মাসিমা বারবার বলেছেন, ফিরে আসার সময়, আমরা যেন ওদের 'আসছি' বলে আসি।

2