মুহম্মদ কে উপহার দেন। পরে সুজন মুহম্মদ আবিষ্কার করেন যে এই মাকড়শা একধরণের সোনালী জাল বোনে এবং সেই জাল এর সুতো এতো শক্ত ও একধরণের রাসায়নিক পদাৰ্থতে পরিপূর্ণ যে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শরীর সেই সুতো দিয়ে সেলাই করলে নিমেষের মধ্যে সেই কাটা অংশ জোড়া লেগে যায়। প্রথমে অসহ্য যন্ত্রনা হয় কিন্তু পরে গভীর প্রশান্তি। ব্রিটিশরা সামান্য ঘা সারানোর কাজে এটা ব্যবহার করলেও মাকড়সার জালের এই গুন তাদের জানা ছিলোনা। সুজন মুহম্মদ এই রহস্য কখনো প্রকাশ করেননি। সে তার কুঠিবাড়ির প্রাসাদের পেছন দিকে এই মাকড়সাকে জাল বোনার জন্য ঝোপঝাড় তৈরী করে দেন এবং বিশালাকার পাঁচিল দিয়ে প্রাসাদের পেছনদিকটা ঘিরে দেন। এই মাকড়সার কথা, তার খুব কাছের লোক, খাজাঞ্চি আফজল মিয়া, প্রধান দ্বাররক্ষক ইলিয়াস খান এবং তার একমাত্র মেয়ে শালিনী, যদিও পরে জানতে পারি শালিনী সুজন মুহাম্মদ এর আসল মেয়ে না, ছাড়া আর কেউ জানতোনা। শালিনী ছিল যেমন সুন্দরী তেমন অস্ত্র চালনায় আর যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী। সুজন মুহম্মদের অনুপস্থিতিতে, রাষ্ঠগিদের ঘন ঘন বরযাত্রীর দল শালিনীর মনে সন্দেহ জাগায় এবং বুঝতে পারে যে কোনো ভাবে সেই সোনার জাল বোনা মাকড়সার কথা রাষ্ঠগিরা জানতে পেরেছে। যদিও কোনো এক অপদার্থ প্রহরী সেই মাকড়সা কে
তৈরী করে। যেটা এখন ইট পাথর দিয়ে ভরিয়ে রাস্তা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবিশ্যি বর্গীরা কখনোই কলকাতায় লুঠপাঠ চালাইনি। কলকাতাকে বেষ্টন করে দীর্ঘ এই চ্যানেল তৈরির জন্য দরকার ছিল অজস্র শ্রমিক এর। ইংরেজরা তখন বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করতে শুরু করে। জগৎশেঠ ছিল ইংরেজদের খাস বন্ধু। আর সেইসময় জগৎ শেঠ এর প্রভাব প্রতিপত্তিও মন্দ ছিলোনা। জগৎ শেঠ প্রায় শতাধিক শ্রমিক পাঠান কলকাতায় সেই মারাঠা বেষ্টনী তৈরির উদ্দেশ্যে। তারই মধ্যে একজন ছিল আদিল চৌধুরী। শোনা যায় ওই সময়কার বাংলার শ্রেষ্ঠ কারিগর ছিলেন ছিলেন। আদিল চৌধুরীর কাজে খুশি হয়ে ব্রিটিশরা তাকে একটি লম্বা একটু লালচে খয়েরি রঙের জ্যান্ত মাকড়শা উপহার দেন। যেটা এখন নেফিলা ক্লাভিপেস নাম পরিচিত। ব্রিটিশরা সুদূর মেক্সিকো থেকে এই ধরণের মাকড়শা আমদানি করতো এবং ওই মাকড়সার রসকে তাদের সৈনিকদের ছোটোখাটো ঘা সারানোর কাজে ব্যবহার করতো। আদিল চৌধুরী এই মাকড়সার আশ্চর্য গুনের কথা শুনে তৎক্ষনাৎ সেটা নিতে রাজি হয়ে যান এবং জগৎ শেঠ এর কাছে পরে এসে বিক্রি করে দেন। জগৎশেঠ তার বন্ধু, বৈদ্য সুজন মুহম্মদ কে এই অত্যাশ্চর্য মাকড়সার কথা বলেন এবং সুজন মুহম্মদ এর অনুরোধে সেই মাকড়শা সুজন
59