First page Back Continue Last page Overview Image

নেই। কিন্তু কি অদ্ভুত একটু আগেই সে ভাবছিলো সে মাকড়সার খাদ্যের মতো মোহের জালে আষ্টেপিষ্টে বাঁধা পড়েছে। আর শেষমেশ নাকি এই যুবতীর নামই মাকড়শা। তার ভেতরটা লজ্জায় আর এক অজানা আনন্দে ভরে উঠলো। এমন সময় যুবতী বলে উঠলো "তুমি আমায় এখান  থেকে নিয়ে পালতে পারবে?" রামচরণের ভেতরটা যেন হু হু করে উঠলো। সে মুখে কিছু না বললেও মনে মনে ভাবলো তোমায় পাওয়ার জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। এরপর যুবতী হঠাৎই তার শাড়ির আঁচলটা নামিয়ে বক্ষবন্ধনীর ভেতর থেকে একটা চিরকুট বের করে রামচরণের দিকে হাত বাড়িয়ে "দেখো এই হলো আমার ঠিকানা।" এই অর্ধঅনাবৃত বক্ষের দিকে রামচরণের কয়েক মুহূর্তের  নিস্পলক দৃষ্টি তার রক্তে যে জোয়ার এনেছিল, সে অনুভব করলো সেই স্রোতে তার শরীরের ভেতরে থাকা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো যেন অবাধে ভেসে যাচ্ছে আর সে স্রোত বুঝি কোনোদিন থামবেনা। রামচরণ চিরকুটটা  হাতে নিয়ে তৎক্ষণাৎ বলে উঠলো "তোমায় মুক্তি দিতে আমি সব করতে পারি। কিন্তু তোমায় নিয়ে এই বিশাল পাঁচিলে কি ভাবে উঠবো। আর আমি একা হলে দৌড়োতে পারতাম। কিন্তু তোমায় নিয়ে দৌড়াতে গেলে নির্ঘাত ধরা পড়বো, দাড়াও ভাবতে দাও।" এই বলে রামচরণ মুখটা নিচের দিকে করে পায়চারি করতে লাগলো। এরপর যুবতী বললো  "একটা উপায়

সেগুলো মুক্তোর মতো ঝরে পড়ছে মাটিতে। এই ধরণের বিস্ময়, ভয়, অসহায়তায় পরিপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন রামচরণ আগে কখনো হয়নি। সে খুব ক্ষীণ একটা কণ্ঠে যুবতীর উদ্দেশ্যে বললো "একি তুমি কাঁদছো কেন? আর মা -মাকড়শা কারো নাম হয় নাকি?" যুবতী কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো "আমি নাসিরপুরের কাছে যেখানে পদ্মা তিন ভাগে ভাগ হয়েছে, ওখানকার একজন সামান্য দিনমজুর এর মেয়ে। সুজন মুহাম্মদের লোকেরা আমায় জোর করে এখানে আটকে রেখেছে। আমি নাকি সুজন মুহাম্মদের পয়া একজন দাসী যে আসার পর সুজন মুহাম্মদের প্রতিপত্তি আকাশ ছোয়া হয়েছে। আর আমার একাহাতে পরিমিত কিন্তু সৌখিন কাজ করার ক্ষমতা দেখে সুজন মুহম্মদ আদর করে আমার নাম দিয়েছেন মাকড়শা। আমি এখানে সুখেই আছি। কিন্তু সুখী পোষা পাখি হয়ে। আমি এ দাসত্ব চাইনা। আমি মুক্তি চাই, আমি আকাশে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়তে চাই।" এবার হঠাৎই একটা কারণে রামচরণের বুকটা ধড়াস করে উঠলো। সে বুঝলো কি বোকামিই না সে করেছে। পাহারাদাড় ব্যাটা কি শুনতে আড়িপেতে কি শুনেছে। আর এই যুবতীর সোনালী চুল আর কাঁচা হলুদের মতো গায়ের রংই যে তার আদরের নাম মাকড়শা থেকে সোনার মাকড়শা তে পরিণত করেছে, তাতে আর তার  কোনো সন্দেহ

57