First page Back Continue Last page Overview Image

বাঁ হাত দিয়ে ধনুকের মাঝখানটা ধরো তারপর ডান হাতের তর্জনী আর মধ্যমার মাঝে তীরের শেষপ্রান্তে পালকটা"। কথাটা শেষ হওয়ার আগেই যুবতী হেসে বললো "ওমা তুমি নিজের হাতে শিখিয়ে না দিলে আমি কেমন করে চালাবো?" এহেন অনুরোধ শুনে রামচরণের হৃদস্পন্দন যে বেড়ে গেলো তাই নয় সে অনুভব করলো সে যেন এক অজানা অদৃশ্য জালে জড়িয়ে পড়ছে। সে জাল মোহের। মাকড়শা খুঁজতে এসে অকৃতকার্য হলেও যে মোহরূপী মাকড়সার জাল তাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ফেলছে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। সে তার বাঁ হাতটা যুবতীর বাঁ হাতে রেখে ডান হাতটা যুবতীর ডান হাতে রাখার আগে অতি মৃদু, প্রেম মাখানো কণ্ঠে জিগেস করলো "কই তোমার নামটা তো বল্লেনা?" যুবতী একটু মুচকি হেসে তীর এর আগায় তার ক্ষেপন করা শানিত দৃষ্টি রামচরণের দিকে ঘুরিয়ে বললো "মাকড়শা"! রামচরণের পায়ের তলার মাটি যেন হঠাৎ কেঁপে উঠলো। সে অজানা এক বিস্ময় আর ভয়ে একটু দূরে ছিটকে পড়লো। আর দেখলো যুবতী ততক্ষনে তীর চালিয়ে দিয়েছে। আর একি! ধনুকে লাগানো দড়িটা যে ছিঁড়ে গেলো! সে কয়েক মুহূর্তের এর জন্য হতবুদ্ধি হয়ে যুবতীর দিকে তাকিয়ে রইলো। প্রথমে তার মনে হলো যুবতীর দৃষ্টিতে এক গভীর প্রশান্তি, তারপরই একি, তার দুচোখ বেয়ে নেমে আসছে যে অঝোর বারিধারা। জোৎস্নার আলোতে  যেন  

বাগানের উত্তর দিকটা একবার ঢুঁ মেরে চলে এলো। এই দেখে যুবতী যখন বাকরুদ্ধ ভাবে বিস্ফারিত চোখে  যুবকের দিকে তাকিয়ে, রামচরণ আত্মগর্বে বলে উঠলো "এতেই শেষ না দেখবে আমার তীর এর নিশানা?" এই বলে সে হাত পনেরো দূরে থাকা একটা আমগাছে ঝোলা আমের দিকে লক্ষ করে তীর ছুড়লো এবং সেই অব্যর্থ লক্ষ্য যে তার গন্তব্যে নির্দ্বিধায় পৌঁছে কৃতকার্য হলো তা বলাই বাহুল্য। এরপর রামচরণ আমটা কুড়িয়ে নিয়ে এসে যুবতীর সামনে এক বিজয়ী সৈনিক এর মতো দাঁড়ালো। সে নিজেও বুঝতে পারছেনা কেন সে তার এইসব গুণাবলী যুবতীর সামনে অযাচিতভাবে প্রদর্শন করছে। তাহলে সে কি যুবতীর মন জয় করতে চায়? এসব সাত পাঁচ ভাবনা ভাবতে ভাবতে রামচরণ যখন যুবতীর চোখের উপর চোখ রেখে একাগ্র চিত্তে দুচোখ মেলে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, যুবতী হঠাৎই চোখ নামিয়ে বললো আমায় "তীর চালানো শিখিয়ে দেবে?" হঠাৎ এই অপ্রত্যাশিত প্রশ্নে রামচরণ একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। সে বললো "তুমি বাগানের মালি হয়ে তীর চালানো শিখে কি করবে?" এরম উত্তর শুনে যুবতীর মুখে যেন একটা গভীর হতাশার ছায়া নেমে এলো। রামচরণ বুঝতে পেরে বললো "আচ্ছা বেশ এসো চেষ্টা করা যাক"। এই বলে সে তার নিজের ধনুকটা যুবতীর হাতে দিয়ে বললো আগে শক্ত করে

56