First page Back Continue Last page Overview Image

গাছের পাতা এবং ডালপালার থেকে চাঁদের আলো  অদ্ভুত ভাবে বিচ্ছুরিত হচ্ছে দেখে, সেদিকে এগোতে যাবে, এমন সময় পেছন দিক থেকে পালকের মতো কোমল কণ্ঠে  যেন একটা কিশোরীর আওয়াজ এলো "তুমি কি খুঁজছ গো ?" বছর চব্বিশ

এর সুঠাম সুশ্রী যুবক রামচরণের শিরদাঁড়া বেয়ে যেন একটা শীতল স্রোত বেয়ে গেলো। পেছন ফিরে সে দেখলো আসলে আওয়াজটা  কিশোরীর নয়। একজন পূর্ণাঙ্গ যুবতীর । কি অপরূপ সুন্দর সে। তার সোনালী চুল থেকে ঠিকরে পড়া চাঁদের আলো আর যুগ যুগ ধরে তপস্যা করে পাওয়া অকৃত্রিম যৌবন যেন রামচরণের অঙ্গপ্রতঙ্গে  বিষাক্ত বানের  মতো  বিঁধতে লাগলো। সে দেখলো যুবতীর খোলা চুল আর পরনে বোধহয় সাদা রঙের শাড়ী যেটা জোৎস্নাতে হলুদ দেখাচ্ছে। নীল বা কালো রঙের বক্ষবন্ধনী আর পায়ে একটা  মখমল পশমের জুতো। রামচরণ নিজের তীর ধনুক কাঁধ থেকে নামিয়ে ডান হাতে ধরলো এবং নিজেকে একটু সামলে নিয়ে কাঁপা কাঁপা  কণ্ঠে জিগেস করলো "কে তুমি?"   যুবতী ওমনি উচ্স্বরে হেসে উঠলো এবং বললো "তুমি কে আগে বলো। তোমায় আজ নিয়ে আমি প্রায় তিন চারদিন দেখলাম এই বাগানে অন্ধকারের মধ্যেঘুরে বেড়াও আর কি একটা খোঁজ"। এই শুনে রামচরণ এর হাত পা যেন ঠান্ডা হয়ে গেলো। সে মনে মনে ভাবলো  এ মেয়ে বলে কি, আমায় আগেও দেখেছে?

সমৃদ্ধির মূল কারণ। তারপর শুরু হলো প্ল্যান। প্রথমত পাহারাদাড়ের বক্তব্য অনুযায়ী, সোনার মাকড়শাটা আছে সুজন মুহম্মদ এর প্রাসাদের একেবারে পেছন দিকে। সেখানে কয়েকজন সশস্ত্র প্রহরী ছাড়া সবার যাওয়া নিষেধ। দিনের বেলা চুরির কোনো প্রশ্নই ওঠেনা। কারণ ধরা পড়লে কচুকাটা করে দেবে। একমাত্র উপায় রাতের বেলা এবং তাও  আবার প্রায় দুইমানুষ উঁচু পাঁচিল পেরোতে হবে। তাই ঠিক হলো বরযাত্রীর দল বের করা হবে ঠিকই, কিন্তু কাজটা করবে শুধু রামচরণ। কারণ ওই পাঁচিল টপকানো এবং নিমেষের মধ্যে দৌড়ে পালানো তার কাছে কোনো ব্যাপারই  না। শুরু হলো প্রস্তুতি এবং সময় বুঝে, সুজন মুহম্মদ তখন কিছুদিনের জন্য মুর্শিদাবাদে ছিলেননা, বের করা হলো বরযাত্রীর দল। প্রথম দিন রাতে রামচরণ অকৃতকার্য হলো। এরপর টানা তিন বার রাতে পাঁচিল টপকে ভেতরে  গিয়েও রামচরণ সেই বাক্সের খোঁজ পেলোনা। শেষ একবার চেষ্টা করে দেখা যাক বলে এক পূর্ণিমার দিন রাষ্ঠগিদের  বরযাত্রী দল আবার হৈহুল্লোড় করতে করতে বেরোলো এবং প্রতিবারের মতো রামচরণ এবারও  পাঁচিল পেরিয়ে বাগানে ঢুকলো। আজ সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। হয় মাকড়শা খুঁজে বের করবে না হয় চুরি ছেড়ে দেবে। কিছুক্ষন বাগানে ইতস্ততঃ ঘোরার পর দক্ষিণপূর্ব কোনের দিকে একটা ঝাঁকড়া

54