চুরি করার অনেক রকম অদ্ভুত পদ্ধতি গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, এই বলে সেজদাদু মুখটা টিটোর দিকে ঘুরিয়ে মুচকি হেসে বললেন "বরযাত্রী সাজা", ওরা একটা নকল বর সাজিয়ে সবাই সেজেগুজে প্রায় জনাপঞ্চাশেক বেরোতো নাচগান হৈহুল্লোড় করতে করতে। যেহেতু ওরা বিভিন্ন ভেলকি বা ভোজবিদ্যা তে পারদর্শী ছিল ওই লম্বা মিছিলের মধ্যে ওইসব কায়দা বা খেলা ইত্যাদি দেখাতো। স্বভাবতই এইধরণের অদ্ভুত বরযাত্রী দেখার জন্য বাড়ির মেয়েরা সব লাইন দিয়ে বেরিয়ে আসত। এরই মধ্যে যারা চুরিতে সিদ্ধ্হস্ত তারা বরযাত্রীর দল থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে চুপিসারে ঢুকে চুরি করে চলে আসতো। এমনকি দিনের বেলাতেও। বেশ কয়েকবার ধরাও পড়েছে। তবে একবার ধরা পরার পরই এরা স্থান পরিবর্তন করে নিতো। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কুঠিবাড়িতে আস্তানা গাড়ার পর এধরণের অভিনব চুরির প্রচেষ্টা এরা একবারও করেনি। তবে সুজন মুহম্মদ এর বাড়ির এক পাহারাদাড় এর কাছ থেকে একটা খবর শোনার পর রাষ্ঠগিরা আর নিজেদের স্থির রাখতে পারলোনা। খবরটা ছিল এই যে - সুজন মুহম্মদ এর বাড়ির পেছন দিকের বাগানে লোকানো, মাটিরতলায় পোঁতা এক বাক্সের মধ্যে একটা লম্বা সোনার মাকড়শা আছে। যেটা সুজন মুহম্মদ কলকাতার কোনো ইংরেজ বন্ধুর কাছ থেকে উপহার পেয়েছেন এবং এটাই নাকি সুজন মুহম্মদ এর এতো
নাকি মারাঠাদের ওই তেজস্বী অশ্বদের সাথে সমান তালে দৌড়াতে পারতো। এই অলৌকিক ক্ষমতা যে তারা কোথা থেকে অর্জন করেছিল তা সবার অজানা। এরমই আর একজন ছিলেন সুজন মুহম্মদ। তবে ইনি ছিলেন মোঘল। সবাই, আলীবর্দী থেকে শুরু করে আলীবর্দীর শত্রুরা অবধি যাকে স্বয়ং আল্লা বা ভগবান ভাবতেন। প্রথমত তিনি ছিলেন পেশায় একাধারে ম্যাজিসিয়ান এবং একাধারে বৈদ্য। জটিল রোগে আক্রান্ত অনেক মুমূর্ষু রোগীকে উনি সারিয়ে তুলেছিলেন। ওনার সবথেকে উল্লেখযোগ্য গুন ছিল সার্জারি। যুদ্ধে অস্ত্রের আঘাতে ফালা ফালা ক্ষত বিক্ষত শরীরকে উনি মুহূর্তের মধ্যে সরিয়ে তুলতেন। অবশ্য এই অভূতপূর্ব সার্জারির কারসাজির কথা নবাবাবের আগে জানা ছিলোনা। মারাঠাদের সাথে বর্ধমান যুদ্ধে আহত অনেক সৈনিককে যখন অল্পকয়েকদিনের মধ্যে সরিয়ে তোলেন, তারপর থেকে নবাবাবের বিশেষ নজরে আসেন। তিনি নবাবের ‘খাস মেহেমান’ উপাধি পান এবং ধনদৌলত ঐশ্বর্যতে ভরপুর হয়ে যান। নবাব কুঠিবাড়ি থেকে একটু দক্ষিণে ওনাকে এক বিশালাকার মহল ও প্রায় শতাদিক সৈন্য সামন্ত ও দাসদাসী উপহার দেন। শোনা যায় সেই সময়কার ধনকুবের জগৎ শেঠ এর সাথেও বিশেষ সান্নিধ্য ছিল বলে উনি আরো ফুলে ফেঁপে উঠেছিলেন। রাষ্ঠগিদের
53