First page Back Continue Last page Overview Image

অত্যাচার আর খামখেয়ালিপনার জন্য। তাই বর্গী দমনে এরা নিজেদের স্বাধীন রাস্তাই বেছে নিয়েছিল। এই সব ছোটছোট দল গুলোর মধ্যে একটা জাতি ছিল 'রাষ্ঠগি' যারা মূলত যাযাবর টাইপ একটা দল ছিল। আজ বর্ধমান তো কাল মুর্শিদাবাদ, বসবাসের কোনো ঠিক ঠিকানা ছিলোনা। এদের পেশা ছিল মূলত ছোটোখাটো চুরি চামারি করা যার জন্য নবাবের দরবারে বহুবার চাবুকও খেতে হয়েছে। তবে রাস্তায় যাতায়াতের পথে ভাস্কর পণ্ডিতের মারাঠা সৈন্যদের অত্যাচার আর লুটপাঠে সর্বশান্ত হয়ে এরা মুর্শিদাবাদে পাকাপাকি আস্তানা গড়ে। বেশ কয়েকবার এদের হাতে বর্গীদের মৃত্যুর খবর পেয়ে আলীবর্দী এদের ছোটোখাটো চুরি বা ডাকাতিকে ক্ষমা করেন এবং মুর্শিদাবাদ এর কুঠিবাড়ির কাছে এদের আস্তানার খোঁজ পাওয়া সত্ত্বেও বিশেষ কোনো ক্ষতি করেননি। এই রাষ্ঠগিদের মধ্যে একটা অদ্ভুত ব্যাপার ছিলো। শোনা যায় এরা তীরধনুক চালাতে পারদর্শী হওয়ার পাশাপাশি,  কয়েকজন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। বিশেষ করে এদের দলের  নেতা, বয়স প্রায় ষাট ছুঁই ছুঁই হবে উনি নাকি কিছুক্ষনের জন্য অদৃশ্য হয়ে যেতে পারতেন। যদিও তোদের এখন যে অংশটুকু শোনাচ্ছি ওটায় ওনার বিশেষ কিছু ভূমিকা নেই। যার আছে সে হলো ওনার ছেলে রামচরণ। যার অবিশ্বাস্য দৌড়ানোর ক্ষমতা বর্গীদের হয়রান করে দিয়েছিলো এবং শোনা যায় রামচরণ

মতো কিছু বিশ্বাস ঘাতক ছিল যারা মারাঠা, তারপরেই সেজদাদু থেমে গিয়ে বললেন "তোরা জানিস তো যে বর্গীরা মারাঠা অশ্বারোহী ছিল"। এটা আমাদের সবার মোটামুটি জানা ছিল। তাই সবাই প্রায় একসাথেই বললাম হ্যাঁ "তা জানি বৈকি"। তারপর টিটো হঠাৎ বললো "বর্গী মানে কি তা আমি জানিনা"। দাদু বললেন "বর্গী  আসলে একটা পার্শিয়ান শব্দ 'বার্গীর' অপভ্রংশ, যার মানে হলো অশ্বারোহী উইথ আর্মস, তবে আমার যতদূর জানা এরা মারাঠা হলেও শিৰাজী বা তার অনুগতদের আইডিওলজির সাথে এদের কোনো মিল ছিলোনা"। যাইহোক সেই সময় মীর হাবিবদের  মতো কিছু ছোট ছোট শ্রেণী শত্রু মোঘলদের বিপক্ষে গিয়ে মারাঠা দের সাহায্য করলেও, আলীবর্দী খাঁ এর অপারদৰ্শিতার কারণে কিছু ছোট ছোট দল নিজেরাই বর্গীদের গোপন এ ক্ষতি করতে থাকে। বর্গীদের লুট করা মালকে ফের লুট করা, মানে ওই চোরের উপর বাটপারি আরকি, বা তাদেরকে প্রাণে মেরেফেলা সব কিছুতেই এরা সিদ্ধহস্ত ছিল। তবে জনসংখ্যায় এরা কম ছিল, বা আলীবর্দী খাঁ এর তরফে কোনোরকম সাহায্য পেতোনা, বলে খুব গোপনে এবং সাবধানে এদের কাজকর্ম বা চলাফেরা করতে হতো। তবে কেন সাহায্য পেতোনা সেটার একটা কারণ হলো বোধহয় আলীবর্দীকে কেউ এরা পছন্দ করতো না তার

52