ঘটেছে যাদের, তাদের ফাইলগুলো খুলে দেখেছে অরিন্দম। ওদের চারজনের মৃত্যুর ধরন একদম এক, আর ওরা সবাই বহিরাগত ছিল। এছাড়া আর কিছুই জানতে পারেনি সে। তাও তদন্তের স্বার্থে এদের সবার বাড়িতেই লোক পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে সে।
মাঝে আরো দুটো দিন কেটে গেছে। আর এর মাঝে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে অরিন্দম। কিন্তু এই তথ্যগুলো এতটাই অসংলগ্ন, যে এখান থেকে কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা সে। জানা গেছে, এই খুন হওয়া চারজনই কোনো না কোনো সময়ে সফ্ট টয় এর কারখানায় কাজ করতো। আরো জানতে পেরেছে সে, মাত্র কয়েক মাস আগে এখানে পর পর কয়েকটি বাঘ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে, এগুলো সম্ভবত পোচারদের কাজ। আর তারপরে হঠাৎ করে সেটা থেমেও যায়। আর তার কিছু দিন পর থেকেই এভাবে বহিরাগত মানুষ খুন হতে থাকে।
গত কয়েক মাসে কারা কারা বাইরে থেকে এসে এই অঞ্চলে বা এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় থেকেছে, তাদের নামের একটা তালিকা তৈরী করতে বলেছিল অরিন্দম। ও আশা করছে আজ কালের মধ্যেই সেটা হাতে পাওয়ার। তার আগে তার আর কিছুই করার নেই। তাই, সে ঠিক করেছে আজই শ্রেয়া কে
বাড়িতে পাঠিয়ে দেবে। এই পরিস্থিতিতে এখানে থাকাটা আর সেফ নয় তার।
কিছুটা পথ, অন্তত নদীপথটা একসাথে যাবে বলে সে বেরিয়েছিল, কিন্তু খবর পায়, সেদিনই রানা ও ফিরছে। তাই শ্রেয়ার আপত্তি সত্ত্বেও তাকে রানার সাথেই পাঠায় অরিন্দম। ঘাট থেকে ফিরে সবে থানায় পৌঁছেছে সে। কিন্তু সেখানে যে খবর সে পেলো, তাতে বাধ্য হয়ে আবার ঘাটের দিকে যায় সে। এই পর্যন্ত যতগুলো খুন হয়েছে, খুনের দিনগুলোতে উপস্থিত বহিরাগতদের নামের লিস্টে একটাই কমন নাম, আর সেটা মিস্টার রানা বোস।
নদীতে স্পীডবোট ছোটে। কিন্তু রানাদের নৌকার কাছাকাছি আসতেই ঘটে যায় ভয়ঙ্কর ঘটনা। যে রানাকে সে শান্ত বলে জানতো, তার হাতে তখন পিস্তল ধরা, আর সেটা তাক করা আছে শ্রেয়ার দিকে। কিছু ভাবতে পারেনা অরিন্দম। বাকি পুলিশদের থামতে বলে, বন্দুক নামিয়ে রাখতে বলে। অসহায়, বড়ো অসহায় লাগছে নিজেকে। রানার নির্দেশে নিজের রিভলভারও ফেলে দেয় অরিন্দম। উঠে আসে রানার নৌকায়, নিরস্ত্র হয়ে।
40