First page Back Continue Last page Overview Image

অলি খুব খেয়াল করে খুঁজছিল বাচ্চাটাকে, যে কচিগলায় বারবার মাকে খুঁজছে। এভাবে মিনিটখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর ওর মনে হয়েছিল, সত্যিই কোনো বাচ্চা ডাকছে তো? নাকি ও ওর মনের ভেতর থেকে শুনতে পাচ্ছে ডাকটা!

এটা মনে হবার পর অলির পক্ষে আর ওখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকাটা সম্ভব ছিলনা। কারণ অলি পরিষ্কার বুঝতেই পারছিল, সত্যিই এরকম কিছু হওয়া মানে সেটা বেশ জটিল কোনো একটা মানসিক রোগের লক্ষণ, এবং সেটুকু বোঝার মতো সেন্সে ও এখনও আছে। তবে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই অলির মনে হল, ও অমূলক চিন্তা করছে। ও বাচ্চাটাকে এই মুহূর্তে দেখতে না পেলেও, গলার স্বরটা যে সত্যিই কোথাও থেকে আসছিল, সেটার বিষয়ে ও নিশ্চিত।

“আসলে কি জানিস, আমার এক বন্ধু, মাসকয়েক আগে চলে গ্যাছে তো! আর সত্যি বলতে কি, ওই বুঝত কিছুটা, আমার ইচ্ছেগুলো, আমাকে বলে দিতে হতোনা, আর ও চলে গেলে আমাদের যোগাযোগটা আর থাকবেনা, সেটা তো আমি জানতামই, মানে এইসব চিন্তাভাবনা মিলিয়েই মনে হয়, … … এই অদ্ভুত চিন্তাটা আমার মাথায় এলো, বল, সায়ন?

অলিকে চায়ের কাপ হাতে এদিকে হেঁটে আসতে দেখে ওর পেছনে চলে এসেছিল সায়ন, অলির সবচেয়ে কাছের বন্ধু এই অফিসে। নিজের নতুন প্রেমের উৎসাহব্যঞ্জক কাহিনী শোনাতে গিয়ে এই বিচিত্র গল্প শুনে বেশ খানিকক্ষণ অদ্ভুতভাবে ভুরু কুঁচকে অলির দিকে তাকিয়ে সায়ন বলল,

“জ্ঞানপাপী! তা যখন সব বুঝতেই পারছিস, তখন বাচ্চাটাকে খোঁজার জন্য এই ভর সন্ধ্যেবেলা ঠাণ্ডার মধ্যে এখানে ঘুরঘুর করছিস কেন?”

সায়নের বকুনিকে দিব্যি ভয় পায় অলি। একটু ঢোঁক গিলে বলল,

“না, মানে, তাও, একবার যদি দেখতে পেতাম, … …”

“তাহলে নিঃসন্দেহ হতাম যে আমার মাথাটা যায়নি। একদম নিঃসন্দেহ হতে পারিস যে তোর মাথাটা গ্যাছে। আর বাচ্চাটাকে তুই মোটেও দেখতে পাবিনা।”

… … নিশ্চিন্তে সিগারেটের ছাই ঝাড়তে ঝাড়তে বলল সায়ন।

“মানে? মানেটা কী এসব কথার?”

এবার অলি একইসঙ্গে বেশ বিরক্ত ও বিস্মিত হয়ে উঠল।

“মানে আবার কী? এখানে কতো কাজে, কতো লোক আসে, কতরকমের কাজে লেবাররা আসে, তোর কোনো আইডিয়া আছে? ওরা দিনকয়েক আগে বাচ্চাদের নিয়ে এসেছিল

25