দেশগ্রাম থেকে বছর শেষের দু’একটা দিন কলকাতায় ঘোরাবে বলে। তারা কি তোর মাথার চিকিৎসার জন্য স্কুলটুল ছাড়িয়ে বাচ্চাগুলোকে এখানে রেখে দেবে, হ্যাঁ?”
অলি এবার মোটামুটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
“ওরা তাহলে ছিল সত্যিই?”
“হ্যাঁ, ছিল তো বটেই, এখন তোর মাথায় একটা ভূত ছেড়ে দিয়ে আবার স্কুলের মাঠে খেলতে চলে গ্যাছে। ঐ জন্যই বলি বয়স টয়স তো যথেষ্ট হল, এবার তুই একটা বিয়ে কর, নাহলে সারাক্ষণ এসব আনতাবড়িই ভাববি।”
অলি এবার সাংঘাতিক বিরক্ত হয়ে সায়নকে বরাবরের মতো চোখ পাকিয়ে বলল,
“আবার! আবার তুই এইসব ফালতু কথা বলতে শুরু করেছিস?”
সায়ন খুব শান্তভাবে এবার অলির দিকে ঘুরে বসে বলল,
“ফালতু কথা তো আমি বলতে চাইনা। কাজের কথাই বলছি, তুই কি রাজকার্য করিস সারাদিন? হাবিজাবি ভাবনাচিন্তা করা ছাড়া? তার চেয়ে বলছি শোন, অফিস এর পর আমার সঙ্গে ঐ ছোট বাচ্চাদের নাইট স্কুলটায় চল। ওদের কেউ নেই, তুই জানিস? তুই ওদের খানিকক্ষণ পড়াবি, রাখবি, পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন করে দিবি। চাই কি, একটা দুটোকে সঙ্গে করে মাঝে
মধ্যে নিয়েও চলে যাবি দু’এক রাত্তিরের জন্য, আর তোদের মাথার কয়েকটা পোকাকে ওদের মাথায় ও ছেড়ে দিবি, মন্দ বললাম?”
“নাহ! মন্দ নয়, বরং জীবনে প্রথমবার একটা কাজের কথা বলেছিস বলেই মনে হচ্ছে।”
“ব্যস, তাহলে এবার শোন তারপর মন্দাক্রান্তা আমায় কি বললে। ওহ! ওর মুখটা তখন যা লাগছিল না!”
“হুমম, বল।”
অলি প্রবল মনোযোগ সহকারে চশমার কাঁচটা মুছে পরে নিয়ে সায়নের দিকে তাকিয়ে আরেকটা নতুন ভালবাসার গল্প শুনতে বসে।
[ ঋণ স্বীকারঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বন্ধুরা ]
26