First page Back Continue Last page Overview Image

এই অফিসবাড়ির এদিকটায় একটা ওয়ার্কশপের মতো আছে। ছোট ছোট কয়েকটা শেড, কারখানার মতো। তার একপাশে টানা কয়েকটা কোয়ার্টারের মতো ঘর। যদিও, অলিদের এপাশে আসার দরকার পড়েনা বড়ো একটা, তবে প্রায়শই ও একা অথবা ওর এখনকার গুটিকয়েক বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে চা কফি খেতে আসে। বারবার চা খাওয়াটা অলির একমাত্র নেশা।

বছর ছয়েক হয়ে গেল অলির এখানে। কিন্তু ঐ ছোট ছোট কোয়ার্টারগুলোতে কারা থাকে, সেটা ও জানেনা। জানবার ইচ্ছেও হয়নি কখনো। আসলে অলিদের বয়সী ছেলেমেয়েরা, মানে অলি, ওর বন্ধুরা, ওরা সবাই তো নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। নিজেদের কাজ, অকাজ, বন্ধুত্ব, প্রেম, অপ্রেম, সম্পর্কের অলিগলি, কানাগলি, ওদের সবার, অন্তত অলির তো বটেই, মাথার, স্মৃতির, অনেকটা স্পেস খেয়ে নিয়েছে। Lower grade কোয়ার্টারের বাসিন্দাদের জন্য কৌতূহলের জায়গা বিশেষ অবশিষ্ট রাখেনি।

অবশ্য এ ব্যাপারে ওকে খুব বেশী দোষ দেওয়াও যায়না। কখনো খুব একটা লোকজন ও দ্যাখেনি ওদিকে। কোনো মেয়ে, বউ বা বাচ্চাকাচ্চা তো নয়ই। কিন্তু দিনকয়েক আগে সন্ধ্যের দিকের একটা ঘটনায় ঐ খানিকটা পোড়োবাড়ির মতো ঘরগুলোতে অলিকে মনোযোগ দিতে অলিকে বাধ্যই করল।

অলি সাধারণতঃ একটু ভীতু ধরনের। ফাঁকা জায়গায়, অন্ধকারে, অল্পস্বল্প কিছু শব্দ হলেই ও খানিকটা চমকে ওঠে। এই ঊনত্রিশ ছুঁই ছুঁই বয়সে অলি খুব ভাল করেই জানে, সেটা ভূতের ভয় নয়, মানুষের ভয় ও নয়। সেটা স্মৃতির ভয়। খুব unpredictably, কোনো কোনো সম্পূর্ণ সম্পর্কহীন শব্দ, ঘটনা অথবা দৃশ্য অলির মনে কোনো ঘটনার স্মৃতি টেনে আনে, যেসব স্মৃতির অনুভূতিকে ও সতর্কভাবে ভুলে থাকতে চায় সেসব স্মৃতি। এবং তারপরে বেশ কিছুক্ষণ একটা অস্বস্তিকর দুঃখবোধ ওকে জড়িয়ে থাকে। সে বোধটুকুতে যে ও সাংঘাতিক কষ্ট পায় তা হয়তো নয়, বরং সেটা চলে গেলে

ইচ্ছে হয়ে

চৈত্রালী সেনগুপ্ত

23