First page Back Continue Last page Overview Image

আরো দুটো বই বেরিয়েছে, একটা বইয়ের নাম 'কিছু মায়া রয়ে গেল' , অন্যটা 'সকলে প্রত্যেকে একা', মৃত্যুর পরে। আরেকটি বই বেরিয়েছে অগ্রন্থিত কবিতা, এসবই মৃত্যুর পরে। কিন্তু বেঁচে থাকা পর্যন্ত শেষ বইটির নাম 'জঙ্গল বিষাদে আছে' । 'হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ' থেকে 'জঙ্গল বিষাদে আছে' পর্যন্ত আসা যে পথটা, তাতে সত্যিই ভাষার পরিবর্তন দেখা যাবে। শঙ্খ ঘোষের প্রথম বইটার নাম ‘দিনগুলি রাতগুলি’ শেষ বইটার নাম আমার মাথায় আসছেনা, সেখানেও দেখা যাবে, ভাষার বিবর্তন হয়েছে। এখানে যখন ব্যক্তিগতভাবে কবিদের ভাষার বিবর্তন ঘটে চলেছে, তেমন সংগঠিতভাবে দেখলে দেখা যাবে, বিরাট বিবর্তন হয়েছে, যা গবেষণার বিষয়। কবিতা যে লিখছে, তার এতকিছু লক্ষ্য করার প্রয়োজন আছে বলে, আমার মনে হয়না। যা আসছে, তাই লিখে চলা।

ডিকনফাইন্ড : 'পাতার পোশাক' নামে কবিতা এবং পরে কাব্য গ্রন্থ, এর শুরুটা কিভাবে হলো?

কবি : আমি শান্তিনিকেতনে বেড়াতে গেছি, আমার স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে। সেখানে যারা ছবি আঁকত, তাদের মধ্যে কবিতা লিখতো এমন দলও ছিল। বিক্রম সিং ও মিঠু সেন নামে দুজন এসে আমায় বললো কলাভবনে কবিতা পড়তে হবে আমাকে। আমি

কলাভবনের চত্বরে কবিতা পড়লাম, ওরা শুনলো। শোনার পর গাছ থেকে যে পাতা পড়েছিল, তাই দিয়ে মালা বানিয়ে আমায় পরিয়ে দিলো। ঐটা ছিল ওদের পক্ষ থেকে আমার কবিতা পড়ার উপহার। এরপরই আমি পাতার পোশাক লিখেছি। এটা ছিল সূচনাবিন্দু, তারপর আমি কলকাতায় ফিরে এসে 'পাতার পোশাক' কবিতাটা লিখলাম। এরকম কবিতার পিছনে অনেক ছোট ছোট ঘটনা থাকে।

ডিকনফাইন্ড : একটা লাইন মনে পড়ল, 'আত্মহত্যা করবে জেনে কেউ কি বাড়ির জন্য মাছ কিনে আনে?' । আপনি কি কারোর আত্মহত্যা দেখেছিলেন, এমন ভাবনা এলো কিভাবে?

কবি : একজনের আত্মহত্যার কথা লিখেছিলাম আমি, মনে আছে, বুলবুল পাখির কবিতা বলে। 'ও বুলবুল পাখি তোমার গান ফুরোলো ঘুমের বড়ি খেয়ে'। আমাদের পাড়ায় বুলবুলদি ছিলেন, আমাদের চেয়ে বয়সে একটু বড়। তিনি থিয়েটার করতেন, বা লাইব্রেরি তে বই পাল্টানোর কাজ করতেন। একদিন হঠাৎ তিনি অনেকগুলো ঘুমের বড়ি খেয়ে মারা গেলেন। এটা ঘটেছিলো ১৯৭৪ সালে, আর কবিতাটি আমি লিখি ১৯৯৪ এ. কুড়ি বছর ধরে কবিতাটা অপেক্ষা করে ছিল আমার ভেতরে।

18